বন্ধুর পথ পেরিয়ে ইতিহাস বাংলাদেশের
ভোরের টেকনাফ ডেস্ক::🖋বৃষ্টি আইনের জটিল ধাঁধা। তাতে পাহাড়সমান টার্গেট। সৌম্য সরকার সেই টার্গেটকে এনে দিলেন নাগালে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন দিলেন শেষ ছোঁয়া।
হয়ে গেল বাংলাদেশের ইতিহাস।
আগের ছয়টি বহুজাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশ হারলেও ‘লাকি সেভেন’ এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পেয়েছে ৫ উইকেটে।
প্রথমবারের মতো ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতা বাংলাদেশ টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃষ্টি নামার আগে ২০.১ ওভারে ম্যাচের ভিত গড়ে ফেলে উইন্ডিজ। এই সময়ে ১৩১ রান তোলে তারা। পরে ২৪ ওভারে নেমে আসা ইনিংসে এক উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তোলে দলটি। বৃষ্টি আইন তথা ডাক-ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ২১০। বাংলাদেশ সেটি তুলে নেয় ২২.৫ ওভারে।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অতিরিক্ত ঠান্ডার সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।
সাদামাটা বোলিং করার পর ব্যাটিংয়ের শুরুতে তামিম নড়বড়ে থাকলেও চালিয়ে খেলতে থাকেন সৌম্য সরকার। বেশি বেশি স্ট্রাইক নিয়ে রানের চাকা সচল রাখতে থাকেন তিনি। প্রথম ৩০ বলের ২০টিই খেলেন সাতক্ষীরার এই তরুণ।
এর ভেতর তামিম জীবন পান তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে। কেমার রোচের শর্ট বলে পরাস্ত হয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন। অ্যাশলে নার্স ঠিক সময়ে বলের নিচে গিয়েও আটকাতে ব্যর্থ হন। ওই সময় ব্যক্তিগত চার রানে ছিলেন তিনি।
জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি ইনফর্ম এই ব্যাটসম্যান। রান বাড়াতে গিয়ে তাড়াহুড়া করছিলেন। বড় শট খেলতে গিয়ে বল ঠিকমতো ব্যাটে নিতে পারছিলেন না। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে দুটি চার হাঁকিয়ে তৃতীয় বলে বিদায় নেন।
শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে যান। এবার দেন শর্ট বল। লেংথ বুঝতে না পেরে চালিয়ে দেন তামিম। ধরা পড়েন মিডঅফে হোল্ডারের হাতে।
তামিমের পর একই ওভারে বিদায় নেন শেষ দুই ম্যাচে সাত এবং শূন্য রানে অপরাজিত থাকা সাব্বির রহমান। গ্যাব্রিয়েলের এই ওভারের শেষ বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন। এদিন দুই বল মোকাবিলা করে রানের খাতা খুলতে পারেননি।
দুই সতীর্থকে হারিয়েও সৌম্য ছিলেন সৌম্যর মতো। তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। ১২তম ওভারে মুশফিককে রেখে পথ ধরেন সৌম্য। র্যামোন রেইফারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅফে ধরা পড়েন। প্রায় এক ঘণ্টার ইনিংসে ৪১ বলে ৯টি চার, তিনটি ছয়ে ৬৬ করে বিদায় নেন এই ড্যাশিং ওপেনার।
দুই ওভার বাদে ওই রেইফারই ফেরান মুশফিককে। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ২২ বলে ৩৬ করেন তিনি।
শেষ ৪৮ বলে বাংলাদেশের দরকার পড়ে ৬৫ রান। মোসাদ্দেক হোসেন ২৪ বলে অপরাজিত ৫২ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলে ম্যাচ বের করে নেন। তার সঙ্গে রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ১৯ রানে।
এই টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে বাংলাদেশের কাছে দুইবার হারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালে একদম অন্যরকম ব্যাটিং করেছে।
বৃষ্টির পর একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে শাই হোপকে সাজঘরে ফেরাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। তার আগে ৬৪ বলে ৬টি চারে ৭৫ রান করে যান তিনি।
২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে মিরাজকে মিডউইকেট দিয়ে স্লগ করতে গিয়ে হোপ মোসাদ্দেকের হাতে ধরা পড়েন লংঅনে। সীমানাদড়ি পার হয়েও বল উপরে রেখে আবার মাঠে ঢুকে তালুবন্দি করেন মোসাদ্দেক।
অন্য ওপেনার আমব্রিস ৭৮ বলে সাতটি চারে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তিন বলে তিন করেন ড্যারেন ব্র্যাভো।
সবচেয়ে বেশি হাত ঘুরিয়েছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। ছয় ওভারে ২৮ রান দেন তিনি। আরেক পেসার সাইফুদ্দিন ২৯ রান খরচ করেন পাঁচ ওভারে। মোস্তাফিজুর রহমান আরও খরুচে। ৫০ রান দিয়েছেন পাঁচ ওভারে।
মিরাজ চার ওভারে এক উইকেট নিতে খরচ করেন ২২।
📜আপনার মন্তব্য লিখুন…🖋